Slide toggle

Welcome to Zass

Zass is a powerfull WordPress / Woocommerce theme with a modern, pixel perfect design suitable for handmade artisans, craft businesses and portfolio websites.

This is a custom, collapsible widget area. Use it like any other sidebar and easily place any number of widgets here.

Have a Question?

Monday - Friday: 09:00 - 18:30 409 Mladost District, Sofia Bulgaria +359 2 123 456 +359 2 654 321 shop@zass.con

ঘর সাজানোর আইডিয়া

সুন্দর,সাবলীল ভাবে বাসা সাজানো আমাদের অনেকেরই কাম্য । পরিপাটি করে গুছিয়ে রাখা চোখেরও আরাম এবং মনেরও শান্তি এনে দেয়। অনেকেরই ইচ্ছা থাকে হায় আল্লাহ্‌ আমার যদি ছবির মতন একটা বাড়ি থাকত। এটা কিন্তু ভুল ধারণা,কারন ইচ্ছা থাকলে এবং আল্লাহ্‌ সহায় হলে নিজের অবস্থানরত বাড়িটাকেই ছবির মতন করে গড়ে তোলা যায়।  আসলে প্রতিটি মানুষেরই সাজানো–গোছানোর রয়েছে স্বতন্ত্র  ধারা। কে কীভাবে বাড়ি সাজাবে, তা একদিকে যেমন নির্ভর করে তার ব্যক্তিগত রুচির ওপর, অন্যদিকে  তার শৌখিনতা আর চাহিদা অনুযায়ী। বাড়ি যেমনই হোক, নিজের হাতে যত্ন ও আদরে একটু বুদ্ধি নিয়ে  সাজালেই আপনার অন্তর আত্মা প্রশান্তিতে ভরে উঠবে।

 

পরিপাটি সাজের মূল কথা হলো সুন্দর করে থাকার অভ্যাসে গড়ে তোলা। প্রতিদিনের কাজের মধ্যে সমস্ত ঘর গুছিয়ে রাখাটা সাথে রান্নার ঘরটাও যোগ করুন। তাহলেই হয়তো আলাদাভাবে বাড়ি সাজানোর কথা ভাবতে হবে না। সঙ্গে যোগ করতে পারেন কিছু কৌশল।
সেন্টার টেবিলে একটা ফ্লাওয়ার ভাস। এই দৃশ্যপট বদলাতে আনুন প্রকৃতির ছোঁয়া। ভাসের বদলে একটি ছড়ানো পাত্র রেখে তাতে পানি দিয়ে ভাসিয়ে রাখতে পারেন নানা রঙের ফুল এবং ছোট ছোট মোম।

ফুল আর মোমের আলোর শুভ্রতা

সেন্টার টেবিলে একটা ফ্লাওয়ার ভাস। এই দৃশ্যপট বদলাতে আনুন প্রকৃতির ছোঁয়া। ভাসের বদলে একটি ছড়ানো পাত্র রেখে তাতে পানি দিয়ে ভাসিয়ে রাখতে পারেন নানা রঙের ফুল এবং ছোট ছোট মোম।

 

 

 

 

 

 

একটি বাটিতে আঠা ও জল মেশান। তাতে একটি উলের গোলা ফেলে দিন। এবার একটি বেলুন ফুলিয়ে তার গায়ে আঠা লাগানো উলের গোলাটি ছড়িয়ে দিন নিজের পছন্দের নকশা অনুযায়ী। আঠা শুকিয়ে গেলে বেলুন ফাটিয়ে দিন। ভিতরের ফাঁপা অংশে টুনির আলো ঢুকিয়ে দিন। তৈরি আপনার ‘থ্রেড ল্যান্টার্ন।’ ঘরের পছন্দের জায়গায় টাঙিয়ে দিন।

 

 

বাড়ির বারান্দায় বা ছাদে মোমবাতি জ্বালানোর চল বহু প্রাচীন। কিন্তু বসার জায়গায় সাজিয়ে তুলতে পারেন অভিনব আলোকসজ্জায়। হুলা হুপের চার পাশে টুনির আলো জড়িয়ে জড়িয়ে বানাতে পারেন হুলা হুপের ঝা়ড়বাতি। তার পর সিলিংয়ের কোনও অংশে ঝুলিয়ে দিন। অতিথিরাও চমৎকৃত হবে এই নতুনত্বে।.

আপনার অন্দরমহলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও রুচিপূর্ণ ঘর বসার ঘরটি। কেননা, মেহমান এসেই এই ঘরটিতে বসবেন এবং আপনাকে ও আপনার রুচির বিচার করবেন প্রধানত এই ঘরটি দেখেই।ভারী সোফাসেটের বদলে বেতের বা কাঠের তৈরি সোফাসেট, টেবিল রাখুন। আবার অনেক সময় আপনি মেঝেতেও বসার ব্যবস্থা করতে পারেন। বসার ঘরে কুশন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, তাই বিভিন্ন আকারের কুশন রাখা যেতে পারে। সোফার কাভার বা কুশন কাভারে জবরজং নকশা একদমই ভালো দেখাবে না। হালকা কাজ বা একরঙা কাভার ব্যবহার করুন। আপনার ঘরের রং বিবেচনা করে মানানসই একটি রং বেছে নিন। আপনি চাইলে নানা রঙে রঙিন করে তুলতে পারেন, আবার একই রঙের বভিন্ন শেড ব্যবহার করেও ঘর সাজাতে পারেন।হালকা শোপিস বা অ্যান্টিকের পিস রাখতে পারেন দেয়ালজুড়ে ছবি রাখা যেতে পারে। হতেই পারে পেইন্টিং বা ফ্যামিলি ফটো, তবে তা স্মার্ট ফ্রেমযুক্ত হলে ভালো হয়। আবার অনেক সময় আয়নার ব্যবহার পাল্টে দিতে পারে পুরো ঘরটাকেই। সাধারণত আয়না ব্যবহার করলে ঘরের আয়তন বেশি বলে মনে হয়।

প্রিয়জনের জন্য উপহার

উপহার পেতে আমরা কে না ভালোবাসি! আর তা যদি পাওয়া যায় প্রিয়জনের কাছ থেকেই, তবেতো কথাই নেই! সামাজিকতা রক্ষায়ই হোক আর ভালোবেসেই হোক, ছোট্ট একটি উপহারই কিন্তু বদলে দিতে পারে আপনার সম্পর্কের মাত্রাটিকে। তবে পুরুষ বা নারী ভেদে কাকে, কী উপহার দিতে হবে, এ নিয়ে আমরা প্রায়ই বেশ ফ্যাসাদে পড়ে যাই। এই লেখায় প্রিয়জনে জন্য উপহার কোন ধরনের তা মাথায় রেখেই ১১ ধরনেরগিফট আইডিয়া দেয়ার চেষ্টা করছি। প্রিয়জনের জন্য উপহার ও টিপস

১. অলংকার

খুব বেশিদিন আগের কথা নয়, ভাবা হত গহনা বুঝি শুধু নারীরাই পরে থাকে। এখন এটি একটি ভুল ধারণা। পুরুষরাও এখন গহনা খুব পছন্দ সহকারেই পরে থাকে। উপহার দেয়ার ক্ষেত্রেও রুচি বুঝে আপনি গহনা বাছাই করতে পারেন। যাকে উপহার দেবেন, তিনি নারী হলে গলার হার, পেন্ডেন্ট কানের দুল, ব্রেসলেট, আংটি – এসব দিতে পারেন। আর পুরুষদের জন্য বেছে নিন ব্রেসলেট, ঘড়ি, লকেট অথবা আংটি। অনেক পুরুষ আবার এক কানে দুল পরতেও পছন্দ করেন। উপহারে বিশেষত্ব আনতে প্রিয়জনের পছন্দের রঙ অথবা শুভ রত্নকেও প্রাধান্য দিতে পারেন।

২. ফুল

ফুল ভালোবাসে না এমন মানুষ পৃথিবীতে খুব কমই আছে। একগুচ্ছ গোলাপ অথবা নানা ধরনের ফুল মিলিয়ে একটি তোড়া বানিয়ে প্রিয়জনকে উপহার দিন। এক্ষেত্রে প্রিয় রঙ বা প্রিয় ফুল কী তা জেনে নিতে পারেন অথবা প্রকৃতির সাথে মিল রেখেও প্রিয়জনকে ফুল উপহার দিয়ে চমকে দিতে পারেন। অর্থাৎ আষাঢ়ে একগুচ্ছ কদম অথবা ফাল্গুনে একগুচ্ছ আগুনরঙা পলাশ কিংবা রাধাচূড়া!

৩. গান

কখনো কথায় কথায় এক ফাঁকে জেনে নিন প্রিয়জনের পছন্দের কণ্ঠশিল্পী অথবা ব্যান্ডের নাম। মাঝে মাঝে সিডি অথবা মিউজিক গিফট কার্ড উপহার দিয়ে চমকে দিন তাকে অথবা বাজাতে জানলে তাকে গিটার, মাউথ অর্গান, বেহালা কিংবা অন্য যেকোনো বাদ্যযন্ত্রও উপহার দিতে পারেন।

৪. খেলাধুলা

আপনার প্রিয় মানুষটি খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী হয়ে থাকলে, তাকে তার প্রিয় দলের ম্যাচের টিকিট উপহার দিতে পারেন। স্থান যদি দেশের বাইরে হয়, তবে তার সাথে আগেই আলোচনা করে নিন। আর নির্দিষ্ট পছন্দের কোন খেলোয়াড় থাকলে তার সাথে দেখা করার ব্যবস্থাও করে দিতে পারেন দলটির জনসংযোগ বিভাগের সাথে কথা বলে।

৫. রোমান্টিক ডিনার প্ল্যান

ক্যান্ডেল লাইট ডিনারের আয়োজন করতে পারেন। খ্যাতিমান কোন রেস্তোরাঁয় অথবা নিজের বাসায় নিজ হাতে রান্না করেও খাওয়াতে পারেন আপনার কাছের মানুষটিকে। এক্ষেত্রে একেবারে ভিন্ন কোন রেসিপি নিয়ে চেষ্টা করে দেখতে পারেন, অথবা তার পছন্দের খাবারটিও রেঁধে রাখতে পারেন। রাঁধার সময় তার সাহায্য নিয়েও রাঁধতে পারেন।

৬. পোশাক

সঙ্গীকে তার স্টাইলের সাথে মানানসই, এমন কিছু পোশাক কিনে দিতে পারেন অথবা তার পছন্দের আউটলেটে তাকে নিয়েও শপিং-এ যেতে পারেন। তবে অবশ্যই দোকানের পোশাক ফেরত কিংবা বদলে নেয়ার পদ্ধতি জেনে নেবেন এবং রিসিপ্ট নিতে ভুল করবেন না।

৭. শিল্পকর্ম

শিল্পের প্রতি আপনার প্রিয়জনের অনুরাগ বুঝে তাকে নামী কোন শিল্পীর পেইন্টিং, শো-পিস ইত্যাদি উপহার দিতে পারেন। কোন প্রদর্শনীতেও বেড়াতে নিয়ে যেতে পারেন।

৮. শখ

প্রিয়জনের শখের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে তাকে তার শখ চর্চার জন্যও কিছু একটা উপহার দিতে পারেন। যেমন- বাগান করতে পছন্দ করলে তাকে এই সম্পর্কিত বই অথবা দুর্লভ গাছের চারা ইত্যাদি উপহার দিতে পারেন। বই পড়তে পছন্দ করলে প্রিয় লেখকের বইও দিতে পারেন। অনেকেই কবিতা পড়তে ও আবৃত্তি করতে ভালবাসেন। তাদের জন্য কবিতার বই, সিডি অথবা আবৃত্তি অনুষ্ঠানেও নিয়ে যেতে পারেন। এছাড়া অনেকেই ম্যাগাজিনও পড়তে বা সংগ্রহ করতে ভালবাসে, সেইদিকেও নজর দিতে পারেন। পুরনো অ্যান্টিক সামগ্রীর প্রতিও অনেকেরই দুর্বলতা থাকে। উপহার হিসেবে সেটিও কিন্তু অমূল্য!

৯. চকোলেট

চকোলেটের পোকা আমরা কমবেশি সবাই! আর সেই জিনিস উপহার হিসেবে পেলেতো যার পর নাই খুশি হই। প্রিয় ব্র্যান্ডের কোন একটি চকোলেট বা এক বক্স হরেকরকম চকোলেটও উপহার হিসেবে মন্দ নয়।

১০. প্রসাধনী

মেয়েদের ক্ষেত্রে নামী ব্র্যান্ডের মেকআপ সামগ্রী, সুগন্ধি ইত্যাদি উপহার দেয়া যায়। ছেলেদের ক্ষেত্রেও সুগন্ধি, বডি স্প্রে, আফটার শেইভ লোশন ইত্যাদি দেয়া যেতে পারে।

১১. অন্যান্য

এছাড়াও ব্যাগ, জুতো, কার্ড, সিনেমার টিকিট, লাঞ্চ/ডিনার অফার, ছোটখাটো ভ্রমণ, একটু বেশি বাজেট থাকলে গাড়ি অথবা বাইক কিংবা একটি ফ্ল্যাটও প্রিয়জনের জন্য উপহার হিসেবে দেয়া যায় কিন্তু!
প্রিয়জনের জন্য উপহার দিয়ে এখন থেকে সঙ্গীকে তাহলে চমকে দিন! অটুট থাকুক আপনাদের সম্পর্ক। শুভ কামনা।
আপনার প্রিয়জনের জন্য যদি উপহার হিসেবে অথেনটিক প্রোডাক্ট খুঁজে থাকেন, তাহলে সাজগোজের দুটি ফিজিক্যাল শপ যা একটি সীমান্ত স্কয়ারে ও অপরটি যমুনা ফিউচার পার্কে অবস্থিত। আর অনলাইনে কিনতে চাইলে শপ.ক্রাফটিক আর্টস থেকে কিনতে পারেন।

কার জন্য কেমন উপহার মানানসই ?

উৎসবে কিংবা নানা অনুষ্ঠানে সব জায়গাতে যাওয়ার সময় প্রথমেই যা মাথায় আসে তা হলো উপহার । ম্যারেজ ডে , জন্মদিন বা পার্টির মতো ছোট-বড় হাজারো অনুষ্ঠানে সবার আগেই থাকে উপহার দেওয়ার বিষয়টি । যখন কারো জন্য উপহার কেনার পালা আসে তখন সেই উপহার নির্বাচন করা নিয়ে তৈরি হয় বিভ্রান্তি ।

কীভাবে উপহার দেবেন , যার জন্য কিনবেন তার সেটা পছন্দ হবে কিনা , তার কাজে লাগবে কি না , কী ধরণের উপহার দেবেন , কোথা থেকে কিনবেন সবকিছুই চিন্তার বিষয় । আবার বাজেটের হিসাবটাই ভুলে যাওয়া চলবে না , কেননা হুট করে হাতে বেশি টাকাও থাকে না । তাই উপহার ঠিক করার আগে কিছু বিষয়ের উপর লক্ষ রাখুন। যা আপনাকে উপহার কিনতে সাহায্য করবে ।

পরিবারের সদস্যদের জন্য উপহার

  • পরিবারের সদস্যদের পছন্দ-অপছন্দ জানা সহজ । তাই সেগুলো চিন্তা করেই উপহার নির্বাচন করুন।
  • পরিবারের বড়দের জন্য যেটা সব থেকে পছন্দের হয় সেটা হলো বাড়ি সাজানোর বিভিন্ন সামগ্রী যেমন-শোপিস, ল্যাম্পশেড, ডেকোরেটিভ ক্যান্ডেল ইত্যাদি কিনে দিতে পারেন । আবার ঘরের কোন একটা জিনিস যা আগে থেকে পছন্দ করা কিন্তু কেনা হয়নি বা তাদের কোন একটা পছন্দের জিনিস যদি হুট করে দরকার হয় তাহলে তো কথাই নেই , সেটাই কিনে দিয়ে চমকে দিতে পারেন সহজেই ।
  • ভাই-বোনের জন্য উপহার কেনার সময় তাদের পছন্দের কথা অবশ্যই মাথায় রাখুন । তাদের ব্যক্তিগত পছন্দের জিনিসগুলো জানলে সেগুলো দেয়াই ভালো । যেমন – যদি বই পড়তে পছন্দ করে তাহলে সেটাই কিনে দিন, আর বই সহজেই যে কোন জায়গায় পাওয়া যায় । সেটা অল্প খরচেই হয়ে যাবে ।

স্বামী বা স্ত্রীকে কিছু উপহার দেয়াটা যার যার ব্যক্তিগত পছন্দ হওয়াই ভালো । এছাড়া ঘরোয়াভাবে অল্প সময়ে সারপ্রাইজ প্ল্যান করতে পারেন । যেমন- শুধু কেক কিনে আনুন আর পছন্দের মধ্যে ছোট কিছু কিনে ফেলুন ।

বন্ধুর জন্য

  • বন্ধুদের অনেককিছুই উপহার দেয়া যায় ।
  • যদি ছোটবেলার বন্ধু হন তাহলে আপনাদের দুজনের পুরোনো কোনো ছবি থাকলে তা ফ্রেমে বাঁধিয়ে উপহার দেয়াটা সব থেকে ভালো । চাইলে কয়েকটি ছবি নিজের মতো সাজিয়ে একসাথে করে নিতে পারেন ।

বন্ধুর পছন্দ মাথায় রেখে উপহার ঠিক করুন । ব্যবহারের বিভিন্ন জিনিস যেমন চাবির রিং, ডায়েরি, ব্যাগ ইত্যাদি তাকে দিতে পারেন। সুন্দর কোনো মগের সাথে তার পছন্দের ফ্লেভারের চা বা কফি উপহার দিতে পারেন। এছাড়া পছন্দের লেখকের বই বা তার প্রতিদিনের ব্যবহারের জিনিসও তার জন্য চমত্‍কার উপহার হতে পারে।

সহকর্মীর জন্য

  • কর্মসূত্রে অফিসের সহকর্মীর সাথে পরিচয়, তাই ব্যক্তিগত উপহার না দেয়াই ভালো । দিতে চাইলেও তা পছন্দ হওয়া নিয়ে সংশয় থেকে যাবে।
  • কোনো অনুষ্ঠান হলে শোপিস, ফুল বা ঘড়ি খুব ভালো উপহার।
  • এছাড়ায় পারফিউম চট করে কিনে ফেলা যায়, সময়ও কম লাগে।

কাউকে উপহার দিতে গেলে নিজের পছন্দটা না ভেবে যাকে উপহার দিচ্ছেন তার পছন্দ চিন্তা করতে হয়। আর খুব বেশি বড় বড় উপহার দেয়ার থেকে কম সময়ে আর অবশ্যই আপনার বাজেট অনুযায়ী উপহার কিনে ফেলুন।

রংপুরের শতরঞ্জি

শতরঞ্জি জিনিসটা রংপুরের ঐতিহ্য। শতরঞ্জি হল এক প্রকার মোটা কাপড়। যা ঘরের মেঝেতে, টেবিল ক্লথে, জায়নামাজ, পাপোশ তৈরিতে ব্যাবহার করা হয়। রংপুর জেলায় তৈরি এই শতরঞ্জি অনেক বিখ্যাত। অনেক প্রাচীন আমল থেকেই শতরঞ্জি তৈরি করছে রংপুরের কৃষকরা। আমাদের আজকের বিষয় রংপুরের শতরঞ্জি।

শতরঞ্জি হল এক ধরনের কার্পেট। এটি অনেক আগে অভিজাত বাড়ির বৈঠকখানায় বা বাংলো বাড়িতে বা খাঞ্জাজিখানায় বসার আসন হিসেবে ব্যাবহার করা হত। এমনকি মুঘল আমলেও সম্রাট আকবরের দরবারে শতরঞ্জি ব্যাবহার করা হত এমন শোনা যায়। শতরঞ্জি শব্দটি ফার্সি শব্দ শতরঞ্জ থেকে এসেছে। শতরঞ্জ হল দাবা খেলার ছক। দাবা খেলার ছকের সাথে শতরঞ্জির নকশার মিল আছে। সেখান থেকে শতরঞ্জি নামটি শতরঞ্জির বুনন হল পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন বুনন পদ্ধতি। এখনও শতরঞ্জি উৎপাদন করতে যন্ত্রের দরকার হয়না। বাঁশ ও রশি ব্যাবহার করে মাটির উপর সুতা দিয়ে টানা তৈরি করা হয়। এরপর প্রতিটি সুতা গননা করে হাত দিয়ে নকশা করা হয়। রংপুরের ঘাঘট নদীর তীরে নিসবেতগঞ্জ নামে একটি গ্রাম আছে। এর আগের নাম ছিল পীরপুর। এই গ্রামের মানুষ দুশ বছর আগে বাঁশ দিয়ে একটি তাঁত যন্ত্র তৈরি করে। এই যন্ত্র দিয়ে তারা মোটা সুতি কাপড় ও উল দিয়ে এক ধরনের পাটি জাতীয় বস্তু তৈরি করে। একে বলা হত মালুদা। শিল্পীরা গ্রামের সুন্দর দৃশ্য নিয়ে কারুকাজ করত। এই সুন্দর মালুদা রাজা-বাদশারাও পছন্দ করতেন। এবং এর খ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পরে।

১৮৩০ সালে নিসবেত নামে একজন ব্রিটিশ কালেক্টর আসেন রংপুরে। তিনি এই মালুদার সৌন্দর্য দেখে অনেক অভিভূত হন। এবং তিনি এই শিল্পটির মান উন্নয়ন এবং এর প্রচার চালাতে সাহায্য করেন। তাঁর নাম অনুসারে শতরঞ্জি তৈরির এই গ্রামের নাম পীরপুর এর বদলে হয় নিসবেতগঞ্জ। এবং মালুদা নামটিও ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়ে শতরঞ্জি হয়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭৬ সালে রাষ্ট্রপতি আবু সাদত মোহাম্মদ সায়েম সরকারিভাবে নিসবেতগ্রামে শতরঞ্জি তৈরির প্রকল্প গ্রহন করেন। তিনি এতে বিসিকের সাহায্য নেন।

১৯৮৫ সালে ৪৫ জন শতরঞ্জি শ্রমিককে সরকারিভাবে প্রশিক্ষন দেওয়া হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এরপর আর সরকারিভাবে তেমন কোন উদ্যোগ গ্রহন করা হয়নি এই শতরঞ্জি শিল্পের প্রতি। কিন্তু এই শিল্পের প্রতি গ্রামের মানুষের ভালবাসা ছিল। তাই তারা শত সমস্যাতেও বাবা দাদার এই ব্যবসা ছাড়েনি। পরে বেসরকারিভাবে কিছু প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসে। এবং তাদের সহযোগিতায় এই শতরঞ্জি পল্লী আবার প্রান ফিরে পায়। বিসিকের একজন এই কেন্দ্র লিজ নেয় এবং বাণিজ্যিকভাবে শতরঞ্জি তৈরি করেন। এরপর রংপুরের শফিকুল আলম সেলিম যিনি কারুপণ্যের মালিক শতরঞ্জের বহুমুখি ব্যাবহার শুরু করেন। খ্যাতিসম্পন্ন ডিজাইনার বিবি রাসেল বাণিজ্য মেলায় এই শতরঞ্জিকে নিয়ে আসেন। এবং এর ফলে ইউরোপে এই শতরঞ্জির খ্যাতি ছড়িয়ে পরে। “আইকা” নামক আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একটি প্রতিষ্ঠান এই শতরঞ্জি ইউরোপে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করেছে। বর্তমানে ৩৬টি দেশে এই শতরঞ্জি রপ্তানি হয়। প্রায় ৪০ লাখ মার্কিন ডলার আয় হয় এই খাত থেকে। আমাদের এই শতরঞ্জি হল বিদেশে রপ্তানি হওয়া কারুশিল্পের মধ্যে প্রধান পণ্য।

নিসবেতগঞ্জ এলাকায় যে শতরঞ্জি পল্লী আছে তাতে নারীপুরুষ সবাই কাজ করে। প্রায় ২০০ পরিবার এখানে শতরঞ্জি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে। যেহেতু চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই রংপুর শহরের রবার্টসনগঞ জ, ঠাকুরগাঁও জেলা সদর, কুড়িগ্রাম ও উলিপুর এলাকাতেও অনেক শতরঞ্জি কেন্দ্র আছে। এসব শতরঞ্জি পল্লিগুলোতে আন্তর্জাতিক মানের শতরঞ্জি উৎপাদন হচ্ছে।

রংপুরের শতরঞ্জি আমাদের দেশের একটি সম্পদ। অনেক মানুষ যেমন এর দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করছে, তেমন দেশের সম্মানও বয়ে আনছে এই শতরঞ্জি শিল্প। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেও এই শিল্প এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই শিল্প যেন হারিয়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখা আমা আমাদের দায়িত্ব। বেঁচে থাকুক রংপুরের শতরঞ্জি দীর্ঘকাল।